IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/১৭

সূরা ইসরায় হযরত মুসা (আ.)-এর ৯টি নিদর্শন

20:09 - July 11, 2022
সংবাদ: 3472116
তেহরান (ইকনা): পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন সূরায় হযরত মূসা (আ.) এবং তাঁর অলৌকিক ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের ১১৪টি সূরার মধ্যে শুধুমাত্র সূরা ইসরায় এই নবীর নয়টি নিদর্শন ও অলৌকিক ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরা ইসরা' বা বনী ইসরাইল হল পবিত্র কুরআনের ১৭ তম সূরা এবং ১১১টি আয়াত বিশিষ্ট মক্কী এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ১৫ পারায় অবস্থিত। নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরটি ৫০তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এই সূরায় একেশ্বরবাদ, পুনরুত্থান, শিরক প্রত্যাখ্যান, নবীর মিরাজ গমন, নবুওয়াতের কারণ, কুরআনের অলৌকিক ঘটনা এবং মানুষের বিশ্বাসের উপর পাপের প্রভাবের মতো বিষয়গুলি আলোচনা করা হয়েছে।
এই সূরাটির নাম "ইসরা" বলা হয়েছে এর প্রথম আয়াতের কারণে, যা মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত নবীর (সা.) রাতের পরিভ্রমণের নির্দেশ করে।
কিছু বর্ণনায় সূরা ইসরার অপর নাম "বনী ইসরাইল" উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ বনী ইসরাইল কাহিনী এর শুরু এবং শেষের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই সূরার শুরুতে বনী ইসরাইল সম্প্রদায়ের দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাদের সতর্ক করেছেন যে, তোমাদের দুর্নীতি পৃথিবীতে শাস্তি এবং ভোগান্তি নিয়ে আসবে। এই সূরার শেষে হযরত মুসা (আ.)-এর নয়টি নিদর্শন ও অলৌকিক ঘটনার সাথে সাথে ফেরাউনের সাথে কথোপকথন, ফেরাউনদের ডুবে যাওয়া এবং মিশরে বনী ইসরাইলদের বসতি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনের আয়াত অনুসারে হযরত মূসাকে ৯টি মোজেজা দেওয়া হয়েছিল। মোজেজা বা অলৌকিক ঘটনাগুলি হল: লাঠি একটি বিশাল সাপে পরিণত হওয়া, মূসার হাতের উজ্জ্বলতা, বজ্রপাতের ঝড়, কৃষি জমিতে পঙ্গপালের আধিপত্য, এফিডস (এক প্রকার উদ্ভিদের কীটপতঙ্গ), ব্যাঙ (যে ব্যাঙ নীল নদী উঠেছিল), নীল নদ রক্তাক্ত হওয়া, খরা এবং সব ধরণের ফলের অভাব এবং ফেরাউন এবং তার সেনাবাহিনীর নীল নদে ডুবে যাওয়া।
মানব আচরণের সাথে সম্পর্কিত একটি দার্শনিক বিষয়ও এই সূরায় বিবেচনা করা হয়েছে। যে মানুষের ভালো বা খারাপ কাজ করার ইচ্ছা ও ক্ষমতা আছে, যেকোনো অবস্থাতে তিনি ভাল এবং খারাপ ফলাফল দেখতে পাবেন। তিনি ভালটি ভালোটি বেছে নেবেন না কি খারাপটি সেব্যাপারে তার পূর্ণ এখতিয়ার রয়েছে।
إِنْ أَحْسَنْتُمْ أَحْسَنْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ وَإِنْ أَسَأْتُمْ فَلَهَا فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ الْآخِرَةِ لِيَسُوءُوا وُجُوهَكُمْ وَلِيَدْخُلُوا الْمَسْجِدَ كَمَا دَخَلُوهُ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَلِيُتَبِّرُوا مَا عَلَوْا تَتْبِيرًا
তোমরা সৎকর্ম করলে তা তোমাদেরই জন্য এবং অসৎকর্ম করলে তাও তোমাদেরই জন্য। অতঃপর যখন দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতির সময় সমাগত হবে তখন (আমরা অপর এক সম্প্রদায়কে প্রেরণ করব) যাতে তারা তোমাদের চেহারাকে বিমর্ষ করে দেয় এবং তারা মসজিদে (বায়তুল মোকাদ্দাস) সেভাবেই প্রবেশ করবে যেভাবে প্রথমবার তাতে প্রবেশ করেছিল এবং যা কিছুর ওপর তারা আধিপত্য লাভ করবে তাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে।
সূরা ইসরা, আয়াত: ৭।
এই সূরায় আরও যেসব বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দিন-রাতের দর্শন, পিতা-মাতার অধিকার জানা, বিচার দিবসে মানুষের আমল পুনরাবৃত্তি করা, অন্যকে সাহায্য করা এবং অপব্যয় পরিহার করা, কৃপণতা, এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা, মাল পত্র ওজনে কম বিক্রি করা (অর্থাৎ যদি ক্রেতা এক কেজি পরিমাণের কোন জিনিস চাই, বিক্রেতা সেই এক কেজির স্থানে ৯০০ গ্রাম জিনিস প্রদান করে), অহংকার এবং রক্তপাত, এবং একগুঁয়েমি।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha