ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর বা আল্লাহর সব চেয়ে ভালো যে সংজ্ঞা হতে পারে সেটা সুরা ইখলাস। এই সুরাই বলা হয়েছে, ” বলো, আল্লাহ এক। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে স্বতন্ত্র। তিনি না জনক না তিনি জাতক এবং না তাঁর সমকক্ষ কেউ আছে।” এই চারটি বাক্যের সাহায্যে আমরা ইসলাম ধর্মে আল্লাহ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারনা করে নিতে পারি।
এবার আসুন আমরা হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর সম্পর্কে জানি। যদি কোনো সাধারন হিন্দুকে প্রশ্ন করি আপনি ক-জন ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন? কেউ হইতো বলবে ১০ জন, কেউ ৫০ জন, কেউ ১০০০ জন আবার কেউ হয়তো বলবেন ৩৩ কোটি জন। কিন্তু আমরা যদি কোনো জ্ঞানী, পন্ডিত যিনি হিন্দু ধর্মের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ গুলো যেমন; বেদ, পূরান, পড়েছেন তার কাছে যাই তাহলে তিনি বলবেন হিন্দুদের কেবল মাত্র একজন ঈশ্বরের ইবাদাত করা উচিত। এ সম্পর্কে বেদ বা হিন্দু ধর্মের বহু কিতাব থেকে বহু উদ্ধৃতি মন্দেত্রওয়া যায়। যেমন, চারটি বেদেই এই শ্লোক মন্ত্র আছে। একে বেদের ব্রহ্মসুত্রও বলা হয়ে থাকে-”একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চান"। অর্থাত ইশ্বর একজন তার মতো কেউ নেই, কেউ নেই সামান্য নেই। আরও আছে ”তিনি একজন তারই উপাসনা করো”(ঋকবেদ ২/৪৫/১৬)। "এক্ম এবম অদ্বৈতম ”অর্থাত তিনি একজন তার মত আর দ্বিতীয় কেউ নেই (ঋকবেদ ১/২/৩)। ”একজনই বিশ্বের প্রভূ”(ঋকবেদ ১০/১২১/৩)। এছাড়াও অনেক জোর দিয়ে বলা হয়েছে-
”ন্ দ্বিতীয় ন্ তৃতীয় চতূর্থ না পুচ্যতে।
ন্ পঞ্চম ন্ ষস্ট সপ্ত না পুচ্যতে।।
ন্ অস্টম ন্ নবম দশমো নআ পুচ্যতে।
য এতং দেব মেক বৃত্যং বেদ।।” (অথর্ব বেদ সুক্ত ১৪/৪/২)
অর্থাত পরমাত্মা এক। তিনি ছাড়া কেহই দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ, পঞ্চম,ষস্ট,সপ্তম,অস্টম,নবম বা দশম বলিয়া অবিহিত আর কেহই নাই। যিনি তাহাকে এক বলিয়া জানেন তিনিই তাহাকে প্রাপ্ত হোন।
উপরের এ সকল স্লোক থেকে এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, হিন্দু ধর্মেও একেশ্বরবাদ স্বীকৃত। তাই ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে প্রথম সাদৃশ্য হল এক ঈশ্বর ব্যাতীত দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর নেই।
জুয়া খেলা নিষিদ্ধ:
ইসলাম ধর্মে জুয়া হারাম এটা সব মুসলমানই জানে কিন্তু বেশির ভাগ হিন্দুই জানে না যে হিন্দু ধর্মেও জুয়া খেলা হারাম বা নিষিদ্ধ। বেদে আছে "জুয়ারি ব্যক্তির শ্বাস তাকে অভিশাপ দেয়, তার স্ত্রীও তাকে ত্যাগ করে। জুয়ারি কে কেউ কানাকরি ঋন দেয় না”(ঋকবেদ/১০।৩৪।৩)। চিন্তা করুন জুয়ারি ব্যাক্তির শ্বাস তাকে অভিশাপ দেয় । অর্থাৎ সে ২৪ ঘন্টায় অভিশাপ পেতে থাকে। হিন্দু ধর্মে জুয়া খেলা তাহলে কত বড় পাপ, কত জঘন্য অপরাধ । ঈশ্বর আমাদের এ রকম জঘন্য খেলা থেকে বাঁচার ক্ষমতা দিন। আমিন!
মদ পান করা নিষিদ্ধ:
পাশ্চাত্যে একটা সমিক্ষায় দেখা গিয়েছে যারা নিকট আত্মীয়ের সাথে যৌনসংসর্গ করে তাদের বেশীর ভাগই তা নেশা অবস্থায় বা মাতাল অবস্থায় করে । এ ছাড়া যারা HIV তে আক্রান্ত হয় তাড়া তো প্রায় সবাই মদ্য পানকারি । যা খেলে মানুষ তার হোশ হারায় সে খাদ্য কিভাবে ভালো হতে পারে। এ কারনে ইসলামে মদ্যপান কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ।
সাধারন হিন্দুদের মধ্যে যদিও মদ পান করা কে কোনো ঘৃন্য কাজ বলে মনে করা হয় না কিন্তু হিন্দু ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ বেদে মদ্য পান থেকে দূরে থাকার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যেমন ঋকবেদে ১০।৩৪।১৩ শ্লোকে বলা হয়েছে "মদ পান করার পর মদের নেশা পানকারির হৃদয়ে স্থান লাভের জন্য লড়াই শুরু করে”। অর্থাৎ মদ পান করার ফলে মদের নেশা মানুষের মন দখল করে নেয় ফলে সে ভালো-খারাপ, পাপ-পুন্য সব কিছুই ভুলে যায় এবং নোংরা কাজে লিপ্ত হয়। তাই মদের নেশা যাতে মনে স্থান করতে না পারে তার জন্য মদ থেকে দূরে থাকতে হবে।
নারীদের পর্দা বা হিজাব:
মুসলিম ও এবং অমুসলিমদের মধ্যে একটি ভুল ধারনা প্রচলিত আছে যে ইসলাম নারীদের ছোটো করে রাখে, তাদের পর্দায় রাখে। এটা আসলে তারা তাদের অজ্ঞানতার কারনে বলে থাকে। ইসলাম শুধু নারীদের নয় পুরুষদেরও পর্দার কথা বলে । আর প্রথমে পুরুষদের কথা বলা হয়েছে তার পর নারীদের। যেমন কুরানের ২৪ নম্বার সুরার ৩০ নম্বার আয়াতে পুরুষদের পর্দার কথা বলা হয়েছে। এর পরের আয়াতে অর্থাৎ ৩১ নম্বার আয়াতে নারীদের পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি পুরুষ এবং নারী উভয়ই শরীর ঢেকে রাখে তাহলে সমাজ থেকে ধর্ষন, ব্যভিচার, অবৈধ সম্পর্ক অনেক কমে যাবে। সৌদি আরব ধর্ষন, ব্যভিচা্র বা অনান্য নোংরামীতে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। এর কারন হল পর্দা এবং ইসলামী শরিয়তের বাস্তবায়ন।
হিন্দু ধর্মেও নারীদের পর্দার কথা বলা হয়েছে। যেমন- যেহেতু ব্রহ্মা তোমাদের নারী করেছেন তাই দৃষ্টিকে অবনত রাখবে, উপরে নয়। নিজেদের পা সামলে রাখো। এমন পোষাক পড়ো যাতে কেউ তোমার দেহ দেখতে না পায় (ঋকবেদ ৮।৩৩।১৯)।
সুত্রঃ ১। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে আল্লাহ ও মুহাম্মাদ - সুশান্ত নন্দী; ২। হিন্দু ধর্মের গোপন কথা
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
"বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম"
অর্থঃ- পরম করুণাময়, অতিশয় দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।
প্রত্যক ধর্মের মধ্যে মূল যে তিনটি বিষয় তা হলো তাওহীদ বা একেশ্বরবাদী বা একত্ববাদ, রিসালাত বা নবুওয়াত বা অবতার এবং আখিরাত বা পরকাল বা পুনর্জন্ম। এখানে ১ম পর্বে আমরা তাওহীদ নিয়ে আলোচনা করব। আসুন তাহলে আলোচনা শুরু করা যাক।
"বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম"
অর্থঃ- পরম করুণাময়, অতিশয় দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।
১. তাওহীদঃ তাওহীদ আরবি শব্দ যার অর্থ - একেশ্বরবাদ বা একত্ববাদ। পুরো পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা মহান মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাকে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যুগে যুগে পৃথিবীতে যতো ধর্ম এসেছে সকল ধর্মের মূল শিক্ষা একেশ্বরবাদ। কিন্তু পরবর্তীকালে এসব ধর্মানুসারীরা তাদের ধর্মীয়গ্রন্থ ও তার আদর্শ থেকে দূরে সরে পরার কারনে, মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পরে। যার ফলে বিভ্রান্ত হয়ে কেউ মূর্তিপূজা, কেউ অগ্নিপূজা, কেউ তারকা, কেউ আগুনপূজা এভাবে তারা বিভিন্ন উপাস্যর পূজা করতে শুরু করে। মূল কারণ কী? তা হলো ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা অর্থাৎ অন্ধ অনুসরণ করা। তাদের যদি বলা হয় তুমি কেন তা পালন কর? তারা বলবেঃ আমার পিতামাতা তা পালন করে তাই আমিও তা পালন করি।
অতএব, জানা গেল যে, আমাদেরকে প্রত্যকটা জানতে হলে ঐ ধর্মের ধর্মীয়গ্রন্থগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
I.হিন্দু ধর্মঃ হিন্দু ধর্মের মূল উৎস সমূহ হল --
১.পবিত্র বেদসমূহ
২.উপনিষদসমূহ
৩.শ্রীমদভগবদগীতা
৪.পূরাণসমূহ
৫.মহাভারত
৬.রামায়ণ ইত্যাদি।
প্রথমে আমরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে একটু আলোচনা করি।
"হিন্দু " শব্দটি এসেছে ইন্দু বা ইন্দুস থেকে। পরিভাষায় যারা ইন্দু বা ইন্দুস তীরে বসবাস ও তার পানি দ্বারা সিঞ্চন করেছে তাদেরকে হিন্দু বলা হয়। এ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করে পারস্য ও আরবরা। অতএব হিন্দু একটা ভুল শব্দ। অন্যদিকে আরেকটা শব্দ তা হলো "সনাতন"। মানে প্রাচীন, প্রাথমিক পর্যায়ের। হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি আনুমানিক ২৯০০ বা ২৫০০ সাল আগে। আজকে আমরা জানি, এর আগেও পৃথিবীতে মানবসভ্যতা বিদ্যমান ছিল।যুক্তি অনুসারে তাদের ধর্ম কি ছিল না? তাহলে বোঝা গেল এর পূর্বে ও ধর্ম ছিল। তার মানে সনাতন শব্দটাও ভুল। স্বামী বিবেকানন্দর মতে, এর অনুসারীদের নাম হওয়া উচিত ছিল বেদান্তবাদ বা বেদান্তবাদী।
আসুন এবার আলোচনা করি তাদের ধর্ম তাওহীদ সম্পর্কে কি বলে। নিচে পবিত্র গ্রন্থগুলোর উদ্ধৃতি দেওয়া হলো অনুবাদসহ যেহেতু তা সংস্কৃত ভাষা---
১. " ইকাম সাত বিপরা বহুধা বদান্তি"
অর্থঃ- জ্ঞানী পুরোহিতরা এক ঈশ্বরকে বহু নামে ডাকে।(ঋগ্বেদ বই ২, স্তবক ১৬৪, শ্লোক ৪৬)
২. "সত্য এক, ঈশ্বর এক, জ্ঞানী পুরোহিতরা তাকে নানা নামে ডাকে" (ঋগ্বেদ বই ১০, স্তবক ১১৪, শ্লোক ৫)
৩."দেব মহা ওসি"
অর্থঃ- নিশ্চয় ভগবান মহান। [অথর্ববেদ বই ২০, স্তবক (অধ্যায়) ৫৮, শ্লোক (মন্ত্র) ৩]
৪."অন্ধত্ব প্রবিশান্তি ইয়ে অসমভূতি মুনাস্তে"
অর্থঃ- তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রাকৃতিক বস্তু পূজা করে। (যজুর্বেদ, অধ্যায় ৪০, শ্লোক ৯)
এখানে, প্রাকৃতিক বস্তু যথা পানি, আগুন, বায়ু, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র ইত্যাদি।
এতে আরো বলা হয়ঃ যারা সম্ভূতি অর্থাৎ সৃষ্ট বস্তুর যথা টেবিল, চেয়ার, ছবি, মূর্তি, পুতুল ইত্যাদি। (রালফ টি. এইচ. গ্রিফিথ সম্পাদিত যজুর্বেদ সংহিতা, পৃষ্ঠা ৫৩৮)
৫."ন তস্য প্রতিমা আস্তি"
অর্থঃ- তার কোন প্রতিমা/প্রতিকৃতি/সমতূল্য নেই।(যজুর্বেদ, অধ্যায় ৩২, শ্লোক ৩)
৬."জাগতিক আকাঙ্ক্ষা যাদের জ্ঞানবুদ্ধিকে চুরি করেছে তারাই গড়া স্রষ্টার পূজা করে।" অর্থাৎ " যারা বস্তুবাদী, তারাই মানুষের হাতে গড়া স্রষ্টা অর্থাৎ সত্য সৃষ্টিকর্তাকে ব্যতীত অন্যান্য দেবদেবীর পূজা করে।" (শ্রীমদভগবদগীতা ৭:২০)
৭." তিনিই সে যে আমাকে জানেন অজাত, অনাদি, বিশ্বব্রক্ষান্ডের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে।"(শ্রীমদভগবদগীতা ১০:৩)
৮." ইকাম ইভানদ্বিতীয়াম"
অর্থঃ- তিনি এক, যার কোনো দ্বিতীয় নেই। (ছান্দোগ্য উপনিষদ অধ্যায় ৬, সেকশন ২, শ্লোক ১)
৯. " তার কোনো পিতামাতা নেই বা প্রভু নেই। "
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ, অধ্যায় ৬, শ্লোক ৯)
১০. " তার আকৃতি দেখা যায় না, কেউ তাকে চোখে দেখতে পায় না। " (শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ, অধ্যায় ৪, শ্লোক ১৯)
১১. " একং ব্রহ্ম দ্বিতীয়ং নাস্তি, নেহ নানাস্তি কিঞ্চন "
অর্থঃ- পরমেশ্বর এক, তিনি ব্যতীত কেহ নাই।
(কট উপনিষদ ২:১:১১)
১২. " একো হ দেবো মানসি প্রবিষ্ট "
অর্থঃ- সে ঈশ্বর এক যে ঈশ্বর সকলের অন্তরে প্রবেশ করিয়া মনের কথা জানেন।(অথর্ববেদ)
এছাড়া আরও
১. ঋগ্বেদ ২:১২:২, ২:১:৩-৭, ২:১২:৫, ১:১৬৪:৬, ১০:৯০:১, ১০:৯০:৪-১২, ১০:১২২:১-১০, ১০:১২৯:১ ইত্যাদি।
২. শ্রীমদভগবদগীতা ১১:৩ ইত্যাদি।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
সত্যিই মানুষ যদি তার চিন্তাকে একটু বিকশিত করত তাহলে সমাজে অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও ... কিছু থাকত না। আমরা সকলেই সুখে শান্তিতে সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম।
মুসলিমরা কি হিন্দুদের সাথে মাঠে খেলা-ধুলা করে না? তাদের কে কি বিয়ে সাদি করে না? তাদের হোটেলে কি ভাত খায় না?
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
সৃষ্টিকর্তা ও তার ধর্ম গ্রন্থগুলো কখনো মিথ্যা বলে না, মিথ্যা কথা বলে ধর্মিও অনুসারীরা ও ধর্ম বিকৃত করে ধর্মিও দালালেরা।
আপনাকে অনুরোধ করবো, ধর্ম গ্রন্থ অনুবাদ অনুযায়ী যেনে-বুঝে নিজ ধর্ম পালন করুণ।

হিন্দু ধর্মের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায় তার কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব গ্রন্থে বেদকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন,
১। “হোতার মিন্দ্রো হোতার মিন্দ্রো মহাসূরিন্দ্রাঃ
অল্লো জ্যেষ্টং শ্রেষ্ঠং পরমং ব্রহ্মণং অল্লাম ॥
অল্লো রসূল মোহাম্মদ রকং বরস্য অল্লো অল্লাম।
আদাল্লাং বুকমেকং অল্লাবুকং লিখর্তকম।”
অর্থ: দেবতাদের রাজা আল্লাহ আদি ও সকলের বড় ইন্দ্রের গুরু। আল্লাহ পূর্ণ ব্রহ্ম, মোহাম্মদ আল্লাহর রাসূল পরম বরণীয় আল্লাহ আল্লাহ। তাঁহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কেহ নাই। আল্লাহ অক্ষয় অব্যয় স্বয়ম্ভু।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
২। হিন্দুধর্মের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সংস্কারক শ্রীশ্রী বালক ব্রহ্মচারী সামবেদে শ্রীকৃষ্ণের নাম-গন্ধও নাই বলে উল্লেখ করেছেন। সেখানে যার নাম আছে তাঁর নাম
‘‘মদৌ বর্তিতা দেবাদ কারান্তে প্রকৃত্তিতা ।
বৃষানাং ভক্ষয়েৎ সদা মেদা শাস্ত্রেচ স্মৃতা। ”
যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ ও শেষ ‘দ’ এবং যিনি বৃষমাংস ভক্ষণ সর্বকালের জন্য পূর্ণ বৈধ করিবেন তিনিই হইবেন বেদানুযয়ী ঋষি”মোহাম্মদ -এর নামের প্রথম ও শেষ অক্ষর বেদের নির্দেশ যথাক্রমে ‘ম’ ও ‘দ’ হওয়াতে তাঁকে মান্যকরাও শাস্ত্রেরই নির্দেশ।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
৩।
“লা-ইলাহা হরতি পাপম ইল্ইলাহা পরম পাদম,
জন্ম বৈকুণ্ঠ অপ ইনুতি ত জপি নাম মুহম্মদ ”
অর্থ: লা-ইলাহার আশ্রয় ছাড়া পাপ মুক্তির কোনো প্রকৃত আশ্রয় নাই। বৈকুণ্ঠে জন্ম লাভের আশা করিলে ইলাহর আশ্রয় নেয়া ছাড়া কোনো গতি নাই। আর এ জন্য মুহাম্মাদ -এর প্রদর্শিত পথের অনুসরণ ও অনুকরণ একান্তই অপরিহার্য।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২২)
৪।
অল্লো রসুল মহম্মদ রকং বরস্য। ”
স্মিন্নস্তিদরে ম্লেচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ।
মহামদ ইতখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমম্বিতঃ।
নৃপশ্চৈব মহাদেবং মুস্থল নিবাসিনম।
চন্দনাদিভির ভ্যার্চ্য তুষ্টার মনসা র্হম।
নমস্তে গিরিজানাথ মুরুস্থল নিবাসিনম।।
ত্রিপুরাসুনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে।।
ম্লেচ্ছৈর্গপ্তায় শুদ্ধায সচিছাদানন্দরুপিণে।
‘যথাসময়ে ‘মহাম্মদ’ নামে একজন মহাপুরুষ আবির্ভূত হইবেন যাহার মরুস্থ (আরব দেশে) সাথে স্বয় সহচরবৃন্দও থাকিবেন। হে মরুর প্রভু! হে জগতগুরু! আপনার প্রতি আমাদের স্তুতিবাদ। আপনি জগতের সমুদয় কলুষাদি ধ্বংসের উপয় অবগত আছেন। আপনাকে প্রণতি জানাই। হে মহাত্মা! আমরা আপনার দাসানুদাস। আমাদেরকে আপনার পদমূলে আশ্রয় প্রদান করুন।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৪)
এবার আসি বেদের কথায়,
হিন্দুধর্মের পরিভাষায় রসূলকে অবতার বলা হয়। সামনে আমরা অবতার নিয়েই আলোচনা করবো। ঈশ্বরের পক্ষ থেকে যাকে অবতীর্ণ করা হয় তাকেই অবতার বলা হয়। সে হিসেবে যিনি সর্ব শেষে আসবেন তাকেই অন্তিম অবতার বলাহয়। অন্তিম অর্থ শেষ এবং অবতার অর্থ রাসূল অর্থাৎ শেষ রাসুল।
হিন্দুধর্মে যুগ চারটি
সত্য, ত্রেতা, দাপর, কলি।
কলিযুগের শেষ অবতার যাকে আমাদের পরিভাষায় শেষনবী বলি সেই কল্কি অবতারের নাম পিতার নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আপনাদের ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়, আপনারা যার অপেক্ষা করছেন, এগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণিত হয়। নিম্নে তার বর্ণনা দেয়া হলো।
অন্তিম অবতারের নাম
অন্তিম অবতার বা শেষ রাসূলের নাম হবে ‘নরাশংস’।
“নরাশংসং সৃধৃষ্টমমপশ্যং সপ্রথস্তমং দিবো ন সদ্মম খস॥ ৯
(ঋগে¦দ ১/১৮/৯)
আমরা একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘নরাশংস’ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘প্রশংসিত ব্যক্তি’। যার আরবী অর্থ হয় ‘মুহাম্মদ’। আর সকল মানুষের সর্ব শেষ নবীর নাম হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্তিম অবতারের পিতার নাম
অন্তিম অবতারের পিতার নাম হবে ‘বিষ্ণযশা’।
‘‘সুমত্যাং বিষ্ণুযশসা গর্ভমাধত্ত বৈষ্ণবম্।’’
(কল্কি-পুরান-১/২/১১)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখাযাবে, ‘বিষ্ণযশা’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘মালিকের দাস’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ আবদুল্লাহ’।
আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ।
অন্তিম অবতারের মাতার নাম
অন্তিম অবতারের মাতার নাম সম্পর্কে কল্কি পুরানে লিখা আছে যে, তার নাম হবে ‘সুমতি’।
‘‘সুমত্যাং মাতরি বিভো। কন্যায়াংত্বন্নিদেশত:।।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘সুমতি’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা।
যার বাংলা অর্থ হয় ‘নিরাপদ-শান্তি’।
যার আরবী অনুবাদ হয় ‘আমেনা’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতার নাম ছিল আমেনা।
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান সম্পর্কে কল্কি পুরানে লেখা আছে, তিনি জন্ম গ্রহণ করবেন , ‘শম্ভল’ নামক স্থানে।
‘‘শম্ভলে বিষ্ণুযশসো গৃহে প্রদুর্ভবাম্যহম।’’
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘শম্ভল’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘শান্তির স্থান’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ বালাদুল আমিন’। আর মক্কা মুকাররমার নাম হলো, বালাদুল আমিন। আর মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের জন্ম তারিখ
অন্তিম অবতার ‘মাধব মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বাদশ তারিখে জন্মগ্রহণ করবেন।’
‘‘দ্বাদশ্যাং শুক্লপক্ষস্য মাধবে মাসি মাধবঃ।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/১৫)
মাধব অর্থ বৈশাখ মাস, বিক্রমী ক্যালেন্ডার মতে বৈশাখকে বসন্তের মাস বলা হয়, যার আরবী অর্থ হয় ‘রবি’।
শুক্ল পক্ষ, অর্থাৎ ‘প্রথম অংশ’ যার আরবী অনুবাদ হয়, ‘আউওয়াল’। একত্রে হয় ‘রবিউল আউওয়াল’ দ্বাদশ তারিখ অর্থাৎ ১২ তারিখ।
আর সর্বশেষ সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রবিউল আউওয়াল মাসের ১২তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের গুণাবলী
হিন্দু ধর্মগ্রন্থে অন্তিম অবতারের যেসব গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, সবগুলো গুণ সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মিলে যায় । যেমন-
১.মিষ্টভাষী (বা বাণীর মাধুর্য)
ঋগে¦দে নরাশংসকে মধুজিহ্বা (মধুর ভাষী, মিষ্টভাষী বা মধুকন্ঠী) বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“মধুজিহ্বৎ হবিস্কিৃকতম্”
অর্থাৎ তাঁর বাণী (ভাষা) হবে মধুর।
(ঋগে¦দে ১/১৩/৩)
পক্ষান্তরে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি বড় গুণ ছিল যে তাঁর ভাষা ছিল খুবই মিষ্ট ও সুমধুর।
(তিরমিজী শরিফ)
২. অপার্থিব বিষয়ের জ্ঞানী
অন্তিম অবতার নরাশংসকে অপার্থিব জ্ঞানের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই জ্ঞনের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের কবি বলে অভিহিত করা হয়।
‘‘নরাশংসঃ সুসুদতীমং যজ্ঞমদাভ্যঃ।
কবির্হি মধুহস্ত্যঃ।।”
(দেখুন ঋগে¦দের ৫/৫/২মন্ত্রে। )
আর আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম কে কিছু কিছু ব্যাপারে অপ্রত্যক্ষ বা অপার্থিব জগতের জ্ঞান দান করেছিলেন। যেমন- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম রোমক ও পারসিকদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধে রোমানদের পরাজয় এবং নয় বছরের মধ্যে রোমানদের বিজয়ের আগ সংবাদ দিয়েছিলেন। নাইনাওয়ার যুগে রোমানরা ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে জয়লাভ করেছিল। পবিত্র কুরআনের সূরা রুম এরই সাথে সম্পর্কিত। এ ধরনের বহু ঘটনা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সিরাত অধ্যয়নে জানা যায়।
৩. অপূর্ব দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারী
নরাশংসকে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই বিশেষত্বের বর্ণনার প্রথমে ঋগে¦দে ‘স্বর্চি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর বা দিব্যকান্তিযুক্ত।
“নরাশংসঃ প্রতি ধামান্যঞ্জুন তিস্রোদিবঃপ্রতি মহা স্বর্চি।।”
(দেখুন, ঋগবেদেও ২/৩/২মন্ত্রে।)
এর তাৎপর্য হলো, এমন অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী যাঁর চেহারা থেকে আলোক বিচ্ছুিরত হয়। ঋগে¦দে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি ঘরে ঘরে আপন মহত্ম্যেরআলোকদ্যুতি পৌঁছে দিবেন
‘‘ঘৃত প্রƒষা মনসা হব্যমূন্দন্মুর্ধনযজ্ঞস্য সমনক্তু দেবান ॥”
(দেখুন, ঋগে¦দের ২/৩/২মন্ত্রে।)
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের ঘরে ঘরে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। অজ্ঞতার অন্ধকার বিদূরিত করেছিলেন এবং অন্ধকার (জাহিলিয়াত) থেকে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন
৪.পাপ নিবারক
ঋগে¦দে নরাশংসকে জনসাধারণের পাপ থেকে নিবৃত্তকারী’ বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“রথংন দুর্গাদ্বসবঃ সুদানবো বিশ্বস্মান্নো (অংসো) নিস্পিপর্তন।।”
(ঋগবেদে ১/১০৬/৪)
একথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমস্ত শিক্ষা তাঁর উপর অবতীর্ণ কুরআন একটি পাপকর্মহীন জীবনের সন্ধান দিয়েছে। এ হলো সৎ পথের একটি আয়না। যার নির্দেশনা সব রকমের পাপাচার থেকে মুক্তির উৎস।
৫. নরাশংস এর ১২ জন পতœী থাকবে
“ম্মা রথস্য নি জিহীহতে দিব ঈশনাস উপস্পৃশ রন ”
অর্থাৎ যিনি বারো পতœী সমভিব্যহারে উটের পিঠে আরোহণ করেন ।
(অথর্বদের কুন্তাপ সূক্ত ৩১/২)
একথা সত্য যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এর বারোজন স্ত্রী ছিলো।
৬.ঘোড়ায় আরোহণ করে সপ্ত আকাশ ভ্রমণ করবেন
শ্রীমদ্ভাগবদ পুরাণে আছে, কল্কি অবতার অশ্বপৃষ্ঠে ভ্রমণ করে পৃথিবী ও সপ্তস্বর্গ ভ্রমণ করবেন।
অশ্বমাগুগমারুহ্য দেবদত্তং জগৎপতিঃ।
অসিনাসাধুদমনমষ্টৈশ্বর্যগুণান্বিতঃ।। ১৯
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ১৯মন্ত্র)
হযরত মুহাম্মদ ও অশ্বপৃষ্ঠে (বোরাক) সপ্ত আকাশ পরিভ্রমণ করে মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন।
৭. গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত হবে (খতনাকৃত হবে)
ভগবত পুরাণে আছে কল্কি অবতারের গুপ্তাঙ্গেও অগ্রভাগ ছেদিত থাকবে অর্থাৎ খতনাকৃত থাকবে।
বিচরন্নাশুনা ক্ষোণ্যাং হয়েনাপ্রতিমদ্যুতিঃ।
নৃপলিঙ্গচ্ছদো দস্যূন্ কোটিশো নিহনিষ্যতি।। ২০
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ২০মন্ত্র)
অর্থাৎ তিনি বেগবান অশ্বে বিচরণকারী, অপ্রতিম, কান্তিময়, গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত, রাজবেশে অসংখ্য গুপ্ত দস্যুকে সংহার করবেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মদ এর গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত ছিল। তিনিও রাষ্ট্রপ্রধান হন এবং বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসংখ্য গুপ্তশত্র“কে হত্যা করেন।
৯. চার সঙ্গীর সহিত করি দমন
কল্কি পুরাণে উল্লেখিতাছে যে, কল্কি অবতার তাঁহার চারজন সঙ্গীর নিয়ে কলি অর্থাৎ শয়তানকে নিবারিত করবেন।
চতুর্ভি ভ্রাতৃভির্দের করিতামি কলিক্ষয়াম
(কল্কি পুরাণ, ২য় অধ্যায়, ৫ম শ্লোক)
তদ্রƒপ হযরত মুহাম্মদ তার সহচরগণের সহিত শয়তানকে নিবারিত করেছেন। সেই চারজন একান্ত অনুগত সহচরগণ হলেনÑ (১) হযরত আবুবকর রা. (২) হযরত উমর রা. (৩) হযরত উসমান রা. ও (৪) হযরত আলী রা.।
১০. জগত গুরুভাগবত
পুরাণে কল্কি অবতারকে ‘জগতপতি’ বলা হয়েছে। যিনি উপদেশাবলী দ্বরা নিপাতী পৃথিবীকে উদ্ধার ও রক্ষা করেন, তাঁকে জগতপতি বলা হয়। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতির গুরু নহেন, তিনি হলেন সমগ্র বিশ্বের গুরু। এই দৃষ্টিকোণে দেখা যায় যে, কুরআনে হযরত মুহাম্মদ সাললাহু আলাইহি ওয়া সাললামকে সমগ্র বিশ্বের নবী ঘোষণা করা হয়েছে।
১১.অল্পভাষণ
অন্তিম অবতারের বড় একটি গুণ হলো তিনি সল্পভাষী হবেন। এদিকে আমাদে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সল্পভাষী ছিলেন।
১২.দান
অন্তিম অবতার দানবীর হবেন। একথা স্পষ্ট যে, আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দানবীর ছিলেন। তাঁর কাছে কেউ কিছু চাইলে ফিরিয়ে দিতেন না এবং সাথীদের দানের জন্যও উৎসাহিত করতেন।
১৩. ঐশ্বরীক বাণী দ্বারা আদিষ্ট হওয়া
কল্কি অবতার সম্পর্কে ভারতে ইহা প্রসিদ্ধ আছে যে, তিনি বৈদিক ধর্ম অর্থাৎ ঈশ্বরীয় ধর্ম প্রতিষ্ঠা করিবেন। তিনি মানবজাতিকে ঈশ্বর হতে প্রাপ্ত শিক্ষা দিবেন। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈশ্বরের নিকট হতে যে কুরআন অবতীর্ণ হয়ে ছিল, তা অমর সত্য। কুরআনে সুমহান নীতি, সদাচার, বিশ্বপ্রেম, একেশ্বরবাদ এবং মহৎ আদেশসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে । প্রাচীন বেদগ্রন্থেও উহার সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
এই ভাবে আমরা কল্কি অবতার এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাঝে প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণসাদৃশ্য ও সামাঞ্জস্য দেখতে পাই।
১৪. দেবতা কর্তৃক সহায়তা
কল্কি পুরাণে উল্লেখ আছে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে দেবতাগণ কল্কি অবতারকে সহায় করবেন। এরূপ ঘটনা হযরত মুহাম্মদ -এর জীবনে ‘বদর’ নামক যুদ্ধে বাস্তবে পরিণত হয়।
অথর্ববেদে হযরত মুহাম্মদ এর প্রসঙ্গ
{অথ কুন্ডাপ সুক্তানি}
ইদংজনা উপশ্র“ত নরাশংস স্তবিষ্যতে।
ষষ্টিং সহস্রা নবতিং চ কৌরম আ রুশমেষু দদ্মহে।। ১
উষ্ট্রা যস্য প্রবাহণ্যে বধমন্তো দ্বির্দশ।
বর্ষ্মা রথস্য নি জিহীড়তে দিব ঈষমাণা উপস্পৃশঃ।।২
এষ ইষায় মামহে শতং নিষ্কাশ দশ স্রজঃ।
ত্রীণি মতান্যর্বতাং সহ্রসা দশ গোনাম।।৩
বচ্যস্ব রেভ বচ্যস্ব বৃক্ষে ন পক্কে শকুনঃ।
নষ্টে জিহ্বা চর্চরীতি ক্ষুরো ন ভূরি জোরিব।।৪
প্র রেভাসো মণীষ্য বৃষা গাব ইবেরতে।
আমোত পুত্রকা এষামমোত গা ইবাসতে।।৫
প্র রেভ ধীং ভরস্ব গোবিন্দুং বসুবিদম্।
দেবত্রেমাং বাচং শ্রীণীহীষুণাবীরস্তারম।।৬
রাজ্ঞো বিশ্বজনীনস্য যো দেবোহমর্ত্যা অতি।
বৈশ্বানরস্য সুষ্টুতিমা সুনোতে পরিক্ষিতঃ।।৭
ঈরিচ্ছিন্নঃ ক্ষেমমকরেনৎ তম আসনমাচরন।
কুলায়ন কৃন্বন কৌরব্যৎ পতির্বদতি জায়য়া।।৮
কতরৎ ত আ হরাণি দধি মন্থাং পরিশ্র“তম।
জাযাঃ পতিং বি পৃচ্ছাতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।৯
অভীবস্বঃ প্র জিহীতে যবঃ পক্বঃ পথো বিলম।
জনঃস ভদ্রমেধতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।১০
ইন্দ্র কারুমবধদুত্তিষ্ঠ বি চরাা জনম।
এমেদু গ্রসৗ চর্কিৃধ সর্ব ইৎ তে পৃণাদরিঃ।।১১
ইহ গাবঃ প্রজায়ধ্বমিহাশ্বা ইহ পুরুষাঃ।
ইহো সহস্রদক্ষিণোহণি পূষা নি ষীদতি।।১২
নেসা ইন্দ্র গাবো রিষন মো আসাং গোপ রীরিযৎ।
মাসমত্রিয়ুর্জন ইন্দ্র মা স্তেন ঈশত।।১৩
উপ নো ন রমসি সুক্তেন বচসা বয়ং ভদ্রেণ বচসা বয়ম।
ঊনাদধিধ্বনো গিরো ন রিষ্যেম কদাচন। ।১৪
(অথর্ববেদ ২০শ কাণ্ড ৯ম অনুবাক ৩১শ সুক্ত)
১ম মন্ত্রে যে ঋষির প্রশংসা গীত হয়েছে তার নাম নরাশংস। নরাশংস অর্থ প্রশংসিত, প্রশংসা।
(ক) ‘কৌরম’ অর্থ দেশত্যাগী। ইহা উক্ত ঋষির দ্বিতীয় পরিচয়। মন্ত্রে উক্ত হইয়াছে যে, দেশত্যাগী ব্যক্তিকে ষাট হাজার নব্বই ব্যক্তির মধ্যে দৃষ্ট হইতেছে। আমরা ইতিহাসে দেখিতে পাই যে, হযরত মুহাম্মদ -এর যুগে আরব দেশের লোক সংখ্যা ছিল প্রায় ষাট হাজার।
আরো দেখা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ তাঁহার মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া যান এবং সমগ্র আরব দেশের ষাঠ হাজার মানুষ তাঁহার সঙ্গে বৈরিতা পোষণ করে।
সুতরাং নরাশংস-প্রশংসিত; কৌরম-দেশত্যাগী, উভয় বিষয় হযরত মুহাম্মদ -এর মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রযোজ্য হইতেছে।
২য় মন্ত্র: এই মন্ত্রে উক্ত ঋষির তিনটি পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে।
(ক) উষ্ট্রে আরোহণকারী হইবেন-
এত দ্বারা সুষ্পষ্টভাবে ব্যাক্ত হয় যে, (১) ভবিষ্যতে আগমনকারী ঋষি মরুভূমি দেশের অধিবাসী হইবেন এবং (২) তিনি ভারত বহির্ভূত অহিন্দু জাতী হইতে আবির্ভূত হইবেন। কারণ উট মরুদেশ ছাড়া পাওয়া যায় না এবং হিন্দু ব্রাহ্মণের জন্য মসুুস্মৃতিতে উটে আরোহণ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। (১১ঃ২০১)। এমনকি মনুসংহিতায় উটের দুধ ও মাংস খাওয়াও নিষিদ্ধ করা হইয়াছে (৫ঃ৮, ১১ঃ১৫৭)।
(খ) তাঁহার একাধিক স্ত্রী থাকিবেন।
(গ) তিনি রথে চড়িয়া উর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করিবেন।
এই তিনটি পরিচয়ও হযরত মুহম্মদ -এর সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে প্রযুক্ত হয়। তিনি মরুভূমি আরব দেশের অধিবাসী ছিলেন, তিনি জীবনব্যাপী উটে আরোহণ করেন। তাঁহার একাধিক স্ত্রী ছিল এবং তিনি ঐশীবাহন বোরাকে চড়িয়া সপ্ত আকশে স্বর্গসমূহে ভ্রমণ করেন, যাহা ‘মিরাজ’ নামে খ্যাত।
৩য় মন্ত্র: (ক) এখানে উক্ত ঋষির আর একটি নাম দেওয়া হইয়াছে তাহা হইল মামহ। ‘মামহ’ সংস্কৃত নয় উহা বিদেশী শব্দ। মামহ আসলে আরবী মহাম্মদ এর সংস্কৃত রূপ।
ঋগে¦দে ৫ম মণ্ডল ২৭ সুক্ত ১ম মন্ত্রে-ও মামহ ঋষির উল্লেখ আছে।
Ei bosta pocha bhabna gulo theke biroto thakai bhalo.

হিন্দু ধর্মের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায় তার কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব গ্রন্থে বেদকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন,
১। “হোতার মিন্দ্রো হোতার মিন্দ্রো মহাসূরিন্দ্রাঃ
অল্লো জ্যেষ্টং শ্রেষ্ঠং পরমং ব্রহ্মণং অল্লাম ॥
অল্লো রসূল মোহাম্মদ রকং বরস্য অল্লো অল্লাম।
আদাল্লাং বুকমেকং অল্লাবুকং লিখর্তকম।”
অর্থ: দেবতাদের রাজা আল্লাহ আদি ও সকলের বড় ইন্দ্রের গুরু। আল্লাহ পূর্ণ ব্রহ্ম, মোহাম্মদ আল্লাহর রাসূল পরম বরণীয় আল্লাহ আল্লাহ। তাঁহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কেহ নাই। আল্লাহ অক্ষয় অব্যয় স্বয়ম্ভু।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
২। হিন্দুধর্মের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সংস্কারক শ্রীশ্রী বালক ব্রহ্মচারী সামবেদে শ্রীকৃষ্ণের নাম-গন্ধও নাই বলে উল্লেখ করেছেন। সেখানে যার নাম আছে তাঁর নাম
‘‘মদৌ বর্তিতা দেবাদ কারান্তে প্রকৃত্তিতা ।
বৃষানাং ভক্ষয়েৎ সদা মেদা শাস্ত্রেচ স্মৃতা। ”
যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ ও শেষ ‘দ’ এবং যিনি বৃষমাংস ভক্ষণ সর্বকালের জন্য পূর্ণ বৈধ করিবেন তিনিই হইবেন বেদানুযয়ী ঋষি”মোহাম্মদ -এর নামের প্রথম ও শেষ অক্ষর বেদের নির্দেশ যথাক্রমে ‘ম’ ও ‘দ’ হওয়াতে তাঁকে মান্যকরাও শাস্ত্রেরই নির্দেশ।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
৩।
“লা-ইলাহা হরতি পাপম ইল্ইলাহা পরম পাদম,
জন্ম বৈকুণ্ঠ অপ ইনুতি ত জপি নাম মুহম্মদ ”
অর্থ: লা-ইলাহার আশ্রয় ছাড়া পাপ মুক্তির কোনো প্রকৃত আশ্রয় নাই। বৈকুণ্ঠে জন্ম লাভের আশা করিলে ইলাহর আশ্রয় নেয়া ছাড়া কোনো গতি নাই। আর এ জন্য মুহাম্মাদ -এর প্রদর্শিত পথের অনুসরণ ও অনুকরণ একান্তই অপরিহার্য।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২২)
৪।
অল্লো রসুল মহম্মদ রকং বরস্য। ”
স্মিন্নস্তিদরে ম্লেচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ।
মহামদ ইতখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমম্বিতঃ।
নৃপশ্চৈব মহাদেবং মুস্থল নিবাসিনম।
চন্দনাদিভির ভ্যার্চ্য তুষ্টার মনসা র্হম।
নমস্তে গিরিজানাথ মুরুস্থল নিবাসিনম।।
ত্রিপুরাসুনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে।।
ম্লেচ্ছৈর্গপ্তায় শুদ্ধায সচিছাদানন্দরুপিণে।
‘যথাসময়ে ‘মহাম্মদ’ নামে একজন মহাপুরুষ আবির্ভূত হইবেন যাহার মরুস্থ (আরব দেশে) সাথে স্বয় সহচরবৃন্দও থাকিবেন। হে মরুর প্রভু! হে জগতগুরু! আপনার প্রতি আমাদের স্তুতিবাদ। আপনি জগতের সমুদয় কলুষাদি ধ্বংসের উপয় অবগত আছেন। আপনাকে প্রণতি জানাই। হে মহাত্মা! আমরা আপনার দাসানুদাস। আমাদেরকে আপনার পদমূলে আশ্রয় প্রদান করুন।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৪)
এবার আসি বেদের কথায়,
হিন্দুধর্মের পরিভাষায় রসূলকে অবতার বলা হয়। সামনে আমরা অবতার নিয়েই আলোচনা করবো। ঈশ্বরের পক্ষ থেকে যাকে অবতীর্ণ করা হয় তাকেই অবতার বলা হয়। সে হিসেবে যিনি সর্ব শেষে আসবেন তাকেই অন্তিম অবতার বলাহয়। অন্তিম অর্থ শেষ এবং অবতার অর্থ রাসূল অর্থাৎ শেষ রাসুল।
হিন্দুধর্মে যুগ চারটি
সত্য, ত্রেতা, দাপর, কলি।
কলিযুগের শেষ অবতার যাকে আমাদের পরিভাষায় শেষনবী বলি সেই কল্কি অবতারের নাম পিতার নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আপনাদের ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়, আপনারা যার অপেক্ষা করছেন, এগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণিত হয়। নিম্নে তার বর্ণনা দেয়া হলো।
অন্তিম অবতারের নাম
অন্তিম অবতার বা শেষ রাসূলের নাম হবে ‘নরাশংস’।
“নরাশংসং সৃধৃষ্টমমপশ্যং সপ্রথস্তমং দিবো ন সদ্মম খস॥ ৯
(ঋগে¦দ ১/১৮/৯)
আমরা একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘নরাশংস’ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘প্রশংসিত ব্যক্তি’। যার আরবী অর্থ হয় ‘মুহাম্মদ’। আর সকল মানুষের সর্ব শেষ নবীর নাম হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্তিম অবতারের পিতার নাম
অন্তিম অবতারের পিতার নাম হবে ‘বিষ্ণযশা’।
‘‘সুমত্যাং বিষ্ণুযশসা গর্ভমাধত্ত বৈষ্ণবম্।’’
(কল্কি-পুরান-১/২/১১)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখাযাবে, ‘বিষ্ণযশা’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘মালিকের দাস’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ আবদুল্লাহ’।
আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ।
অন্তিম অবতারের মাতার নাম
অন্তিম অবতারের মাতার নাম সম্পর্কে কল্কি পুরানে লিখা আছে যে, তার নাম হবে ‘সুমতি’।
‘‘সুমত্যাং মাতরি বিভো। কন্যায়াংত্বন্নিদেশত:।।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘সুমতি’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা।
যার বাংলা অর্থ হয় ‘নিরাপদ-শান্তি’।
যার আরবী অনুবাদ হয় ‘আমেনা’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতার নাম ছিল আমেনা।
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান সম্পর্কে কল্কি পুরানে লেখা আছে, তিনি জন্ম গ্রহণ করবেন , ‘শম্ভল’ নামক স্থানে।
‘‘শম্ভলে বিষ্ণুযশসো গৃহে প্রদুর্ভবাম্যহম।’’
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘শম্ভল’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘শান্তির স্থান’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ বালাদুল আমিন’। আর মক্কা মুকাররমার নাম হলো, বালাদুল আমিন। আর মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের জন্ম তারিখ
অন্তিম অবতার ‘মাধব মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বাদশ তারিখে জন্মগ্রহণ করবেন।’
‘‘দ্বাদশ্যাং শুক্লপক্ষস্য মাধবে মাসি মাধবঃ।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/১৫)
মাধব অর্থ বৈশাখ মাস, বিক্রমী ক্যালেন্ডার মতে বৈশাখকে বসন্তের মাস বলা হয়, যার আরবী অর্থ হয় ‘রবি’।
শুক্ল পক্ষ, অর্থাৎ ‘প্রথম অংশ’ যার আরবী অনুবাদ হয়, ‘আউওয়াল’। একত্রে হয় ‘রবিউল আউওয়াল’ দ্বাদশ তারিখ অর্থাৎ ১২ তারিখ।
আর সর্বশেষ সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রবিউল আউওয়াল মাসের ১২তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের গুণাবলী
হিন্দু ধর্মগ্রন্থে অন্তিম অবতারের যেসব গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, সবগুলো গুণ সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মিলে যায় । যেমন-
১.মিষ্টভাষী (বা বাণীর মাধুর্য)
ঋগে¦দে নরাশংসকে মধুজিহ্বা (মধুর ভাষী, মিষ্টভাষী বা মধুকন্ঠী) বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“মধুজিহ্বৎ হবিস্কিৃকতম্”
অর্থাৎ তাঁর বাণী (ভাষা) হবে মধুর।
(ঋগে¦দে ১/১৩/৩)
পক্ষান্তরে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি বড় গুণ ছিল যে তাঁর ভাষা ছিল খুবই মিষ্ট ও সুমধুর।
(তিরমিজী শরিফ)
২. অপার্থিব বিষয়ের জ্ঞানী
অন্তিম অবতার নরাশংসকে অপার্থিব জ্ঞানের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই জ্ঞনের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের কবি বলে অভিহিত করা হয়।
‘‘নরাশংসঃ সুসুদতীমং যজ্ঞমদাভ্যঃ।
কবির্হি মধুহস্ত্যঃ।।”
(দেখুন ঋগে¦দের ৫/৫/২মন্ত্রে। )
আর আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম কে কিছু কিছু ব্যাপারে অপ্রত্যক্ষ বা অপার্থিব জগতের জ্ঞান দান করেছিলেন। যেমন- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম রোমক ও পারসিকদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধে রোমানদের পরাজয় এবং নয় বছরের মধ্যে রোমানদের বিজয়ের আগ সংবাদ দিয়েছিলেন। নাইনাওয়ার যুগে রোমানরা ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে জয়লাভ করেছিল। পবিত্র কুরআনের সূরা রুম এরই সাথে সম্পর্কিত। এ ধরনের বহু ঘটনা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সিরাত অধ্যয়নে জানা যায়।
৩. অপূর্ব দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারী
নরাশংসকে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই বিশেষত্বের বর্ণনার প্রথমে ঋগে¦দে ‘স্বর্চি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর বা দিব্যকান্তিযুক্ত।
“নরাশংসঃ প্রতি ধামান্যঞ্জুন তিস্রোদিবঃপ্রতি মহা স্বর্চি।।”
(দেখুন, ঋগবেদেও ২/৩/২মন্ত্রে।)
এর তাৎপর্য হলো, এমন অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী যাঁর চেহারা থেকে আলোক বিচ্ছুিরত হয়। ঋগে¦দে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি ঘরে ঘরে আপন মহত্ম্যেরআলোকদ্যুতি পৌঁছে দিবেন
‘‘ঘৃত প্রƒষা মনসা হব্যমূন্দন্মুর্ধনযজ্ঞস্য সমনক্তু দেবান ॥”
(দেখুন, ঋগে¦দের ২/৩/২মন্ত্রে।)
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের ঘরে ঘরে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। অজ্ঞতার অন্ধকার বিদূরিত করেছিলেন এবং অন্ধকার (জাহিলিয়াত) থেকে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন
৪.পাপ নিবারক
ঋগে¦দে নরাশংসকে জনসাধারণের পাপ থেকে নিবৃত্তকারী’ বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“রথংন দুর্গাদ্বসবঃ সুদানবো বিশ্বস্মান্নো (অংসো) নিস্পিপর্তন।।”
(ঋগবেদে ১/১০৬/৪)
একথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমস্ত শিক্ষা তাঁর উপর অবতীর্ণ কুরআন একটি পাপকর্মহীন জীবনের সন্ধান দিয়েছে। এ হলো সৎ পথের একটি আয়না। যার নির্দেশনা সব রকমের পাপাচার থেকে মুক্তির উৎস।
৫. নরাশংস এর ১২ জন পতœী থাকবে
“ম্মা রথস্য নি জিহীহতে দিব ঈশনাস উপস্পৃশ রন ”
অর্থাৎ যিনি বারো পতœী সমভিব্যহারে উটের পিঠে আরোহণ করেন ।
(অথর্বদের কুন্তাপ সূক্ত ৩১/২)
একথা সত্য যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এর বারোজন স্ত্রী ছিলো।
৬.ঘোড়ায় আরোহণ করে সপ্ত আকাশ ভ্রমণ করবেন
শ্রীমদ্ভাগবদ পুরাণে আছে, কল্কি অবতার অশ্বপৃষ্ঠে ভ্রমণ করে পৃথিবী ও সপ্তস্বর্গ ভ্রমণ করবেন।
অশ্বমাগুগমারুহ্য দেবদত্তং জগৎপতিঃ।
অসিনাসাধুদমনমষ্টৈশ্বর্যগুণান্বিতঃ।। ১৯
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ১৯মন্ত্র)
হযরত মুহাম্মদ ও অশ্বপৃষ্ঠে (বোরাক) সপ্ত আকাশ পরিভ্রমণ করে মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন।
৭. গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত হবে (খতনাকৃত হবে)
ভগবত পুরাণে আছে কল্কি অবতারের গুপ্তাঙ্গেও অগ্রভাগ ছেদিত থাকবে অর্থাৎ খতনাকৃত থাকবে।
বিচরন্নাশুনা ক্ষোণ্যাং হয়েনাপ্রতিমদ্যুতিঃ।
নৃপলিঙ্গচ্ছদো দস্যূন্ কোটিশো নিহনিষ্যতি।। ২০
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ২০মন্ত্র)
অর্থাৎ তিনি বেগবান অশ্বে বিচরণকারী, অপ্রতিম, কান্তিময়, গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত, রাজবেশে অসংখ্য গুপ্ত দস্যুকে সংহার করবেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মদ এর গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত ছিল। তিনিও রাষ্ট্রপ্রধান হন এবং বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসংখ্য গুপ্তশত্র“কে হত্যা করেন।
৯. চার সঙ্গীর সহিত করি দমন
কল্কি পুরাণে উল্লেখিতাছে যে, কল্কি অবতার তাঁহার চারজন সঙ্গীর নিয়ে কলি অর্থাৎ শয়তানকে নিবারিত করবেন।
চতুর্ভি ভ্রাতৃভির্দের করিতামি কলিক্ষয়াম
(কল্কি পুরাণ, ২য় অধ্যায়, ৫ম শ্লোক)
তদ্রƒপ হযরত মুহাম্মদ তার সহচরগণের সহিত শয়তানকে নিবারিত করেছেন। সেই চারজন একান্ত অনুগত সহচরগণ হলেনÑ (১) হযরত আবুবকর রা. (২) হযরত উমর রা. (৩) হযরত উসমান রা. ও (৪) হযরত আলী রা.।
১০. জগত গুরুভাগবত
পুরাণে কল্কি অবতারকে ‘জগতপতি’ বলা হয়েছে। যিনি উপদেশাবলী দ্বরা নিপাতী পৃথিবীকে উদ্ধার ও রক্ষা করেন, তাঁকে জগতপতি বলা হয়। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতির গুরু নহেন, তিনি হলেন সমগ্র বিশ্বের গুরু। এই দৃষ্টিকোণে দেখা যায় যে, কুরআনে হযরত মুহাম্মদ সাললাহু আলাইহি ওয়া সাললামকে সমগ্র বিশ্বের নবী ঘোষণা করা হয়েছে।
১১.অল্পভাষণ
অন্তিম অবতারের বড় একটি গুণ হলো তিনি সল্পভাষী হবেন। এদিকে আমাদে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সল্পভাষী ছিলেন।
১২.দান
অন্তিম অবতার দানবীর হবেন। একথা স্পষ্ট যে, আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দানবীর ছিলেন। তাঁর কাছে কেউ কিছু চাইলে ফিরিয়ে দিতেন না এবং সাথীদের দানের জন্যও উৎসাহিত করতেন।
১৩. ঐশ্বরীক বাণী দ্বারা আদিষ্ট হওয়া
কল্কি অবতার সম্পর্কে ভারতে ইহা প্রসিদ্ধ আছে যে, তিনি বৈদিক ধর্ম অর্থাৎ ঈশ্বরীয় ধর্ম প্রতিষ্ঠা করিবেন। তিনি মানবজাতিকে ঈশ্বর হতে প্রাপ্ত শিক্ষা দিবেন। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈশ্বরের নিকট হতে যে কুরআন অবতীর্ণ হয়ে ছিল, তা অমর সত্য। কুরআনে সুমহান নীতি, সদাচার, বিশ্বপ্রেম, একেশ্বরবাদ এবং মহৎ আদেশসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে । প্রাচীন বেদগ্রন্থেও উহার সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
এই ভাবে আমরা কল্কি অবতার এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাঝে প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণসাদৃশ্য ও সামাঞ্জস্য দেখতে পাই।
১৪. দেবতা কর্তৃক সহায়তা
কল্কি পুরাণে উল্লেখ আছে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে দেবতাগণ কল্কি অবতারকে সহায় করবেন। এরূপ ঘটনা হযরত মুহাম্মদ -এর জীবনে ‘বদর’ নামক যুদ্ধে বাস্তবে পরিণত হয়।
অথর্ববেদে হযরত মুহাম্মদ এর প্রসঙ্গ
{অথ কুন্ডাপ সুক্তানি}
ইদংজনা উপশ্র“ত নরাশংস স্তবিষ্যতে।
ষষ্টিং সহস্রা নবতিং চ কৌরম আ রুশমেষু দদ্মহে।। ১
উষ্ট্রা যস্য প্রবাহণ্যে বধমন্তো দ্বির্দশ।
বর্ষ্মা রথস্য নি জিহীড়তে দিব ঈষমাণা উপস্পৃশঃ।।২
এষ ইষায় মামহে শতং নিষ্কাশ দশ স্রজঃ।
ত্রীণি মতান্যর্বতাং সহ্রসা দশ গোনাম।।৩
বচ্যস্ব রেভ বচ্যস্ব বৃক্ষে ন পক্কে শকুনঃ।
নষ্টে জিহ্বা চর্চরীতি ক্ষুরো ন ভূরি জোরিব।।৪
প্র রেভাসো মণীষ্য বৃষা গাব ইবেরতে।
আমোত পুত্রকা এষামমোত গা ইবাসতে।।৫
প্র রেভ ধীং ভরস্ব গোবিন্দুং বসুবিদম্।
দেবত্রেমাং বাচং শ্রীণীহীষুণাবীরস্তারম।।৬
রাজ্ঞো বিশ্বজনীনস্য যো দেবোহমর্ত্যা অতি।
বৈশ্বানরস্য সুষ্টুতিমা সুনোতে পরিক্ষিতঃ।।৭
ঈরিচ্ছিন্নঃ ক্ষেমমকরেনৎ তম আসনমাচরন।
কুলায়ন কৃন্বন কৌরব্যৎ পতির্বদতি জায়য়া।।৮
কতরৎ ত আ হরাণি দধি মন্থাং পরিশ্র“তম।
জাযাঃ পতিং বি পৃচ্ছাতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।৯
অভীবস্বঃ প্র জিহীতে যবঃ পক্বঃ পথো বিলম।
জনঃস ভদ্রমেধতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।১০
ইন্দ্র কারুমবধদুত্তিষ্ঠ বি চরাা জনম।
এমেদু গ্রসৗ চর্কিৃধ সর্ব ইৎ তে পৃণাদরিঃ।।১১
ইহ গাবঃ প্রজায়ধ্বমিহাশ্বা ইহ পুরুষাঃ।
ইহো সহস্রদক্ষিণোহণি পূষা নি ষীদতি।।১২
নেসা ইন্দ্র গাবো রিষন মো আসাং গোপ রীরিযৎ।
মাসমত্রিয়ুর্জন ইন্দ্র মা স্তেন ঈশত।।১৩
উপ নো ন রমসি সুক্তেন বচসা বয়ং ভদ্রেণ বচসা বয়ম।
ঊনাদধিধ্বনো গিরো ন রিষ্যেম কদাচন। ।১৪
(অথর্ববেদ ২০শ কাণ্ড ৯ম অনুবাক ৩১শ সুক্ত)
১ম মন্ত্রে যে ঋষির প্রশংসা গীত হয়েছে তার নাম নরাশংস। নরাশংস অর্থ প্রশংসিত, প্রশংসা।
(ক) ‘কৌরম’ অর্থ দেশত্যাগী। ইহা উক্ত ঋষির দ্বিতীয় পরিচয়। মন্ত্রে উক্ত হইয়াছে যে, দেশত্যাগী ব্যক্তিকে ষাট হাজার নব্বই ব্যক্তির মধ্যে দৃষ্ট হইতেছে। আমরা ইতিহাসে দেখিতে পাই যে, হযরত মুহাম্মদ -এর যুগে আরব দেশের লোক সংখ্যা ছিল প্রায় ষাট হাজার।
আরো দেখা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ তাঁহার মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া যান এবং সমগ্র আরব দেশের ষাঠ হাজার মানুষ তাঁহার সঙ্গে বৈরিতা পোষণ করে।
সুতরাং নরাশংস-প্রশংসিত; কৌরম-দেশত্যাগী, উভয় বিষয় হযরত মুহাম্মদ -এর মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রযোজ্য হইতেছে।
২য় মন্ত্র: এই মন্ত্রে উক্ত ঋষির তিনটি পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে।
(ক) উষ্ট্রে আরোহণকারী হইবেন-
এত দ্বারা সুষ্পষ্টভাবে ব্যাক্ত হয় যে, (১) ভবিষ্যতে আগমনকারী ঋষি মরুভূমি দেশের অধিবাসী হইবেন এবং (২) তিনি ভারত বহির্ভূত অহিন্দু জাতী হইতে আবির্ভূত হইবেন। কারণ উট মরুদেশ ছাড়া পাওয়া যায় না এবং হিন্দু ব্রাহ্মণের জন্য মসুুস্মৃতিতে উটে আরোহণ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। (১১ঃ২০১)। এমনকি মনুসংহিতায় উটের দুধ ও মাংস খাওয়াও নিষিদ্ধ করা হইয়াছে (৫ঃ৮, ১১ঃ১৫৭)।
(খ) তাঁহার একাধিক স্ত্রী থাকিবেন।
(গ) তিনি রথে চড়িয়া উর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করিবেন।
এই তিনটি পরিচয়ও হযরত মুহম্মদ -এর সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে প্রযুক্ত হয়। তিনি মরুভূমি আরব দেশের অধিবাসী ছিলেন, তিনি জীবনব্যাপী উটে আরোহণ করেন। তাঁহার একাধিক স্ত্রী ছিল এবং তিনি ঐশীবাহন বোরাকে চড়িয়া সপ্ত আকশে স্বর্গসমূহে ভ্রমণ করেন, যাহা ‘মিরাজ’ নামে খ্যাত।
৩য় মন্ত্র: (ক) এখানে উক্ত ঋষির আর একটি নাম দেওয়া হইয়াছে তাহা হইল মামহ। ‘মামহ’ সংস্কৃত নয় উহা বিদেশী শব্দ। মামহ আসলে আরবী মহাম্মদ এর সংস্কৃত রূপ।
ঋগে¦দে ৫ম মণ্ডল ২৭ সুক্ত ১ম মন্ত্রে-ও মামহ ঋষির উল্লেখ আছে।
আলাদা আলাদা ভাবে জানতে চাই।
পড়ে উপকৃত হলাম।
ধন্যবাদ
আলাদা আলাদা ভাবে জানতে চাই।
প্রিয় ভাই, শুধু হিন্দু নয় সকল ধর্মের সাথে ইসলামের মূল ও মৌলিক যে পার্থক্য তা হচ্ছে বিশ্বাস ও ইবাদতের ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তাকে এক ও শরীকবিহীন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া।
ইসলাম ধর্ম একত্ববাদে বিশ্বাসী
হিন্দু ধর্ম বহুত্ববাদে বিশ্বাসী
খ্রিষ্টান ধর্ম ত্রি-তত্ববাদে বিশ্বাসী
এই যগের মানুষ মসলিম বলি আর হিন্দু বলি
আমাদের মাঝে ভিবেগ থাকিও আমরা ভিবেগ ছাড়া কাছ করি
আবার দেখা গেলো কি যে কাজে খারাপ কাজ থাকে ওই কাজ আমরা আরো বেশি করে থাকি
আল্লাহু যেনো আমাদেরকে খারাপ কাজ থেকে হেফাজত করেন এবং ভালো পথে চলার তৈফিক দান করুন আমিন
শুধু মাত্র হিন্দুরাই মনে করে তারা জাতিগত শত্রু মুসলিমদের ।
কিন্তু
মুসলিমরা তা কি কখনো মনে করে।
না কখনই না
শুধু মাত্র হিন্দুরাই মনে করে তারা জাতিগত শত্রু মুসলিমদের ।
কিন্তু
মুসলিমরা তা কি কখনো মনে করে।
না কখনই না
নাস্তিক।
কাল্পনিক আল্লার বান্দা।
আপনার কথাটি হচ্ছে মৌলিক কথা। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি থাকে তাহলে কি মুসলিমদের একজন সৃষ্টি করেছে, হিন্দুদের অন্যজন কিংবা খ্রিষ্টান বা ইহুদীদের আরেকজন এমনকি হওয়া সম্ভব। কোন বুদ্ধিমান জ্ঞানী লোকের দ্বারা এমনটি ভাবা কি কখনো সম্ভব? না অব্যশই না। যদিও আমি যুক্তি দিয়ে ধর্ম মানা ও বোঝার চেষ্টা করি না তবুও বুঝার জন্য বলছি, পৃষিবীতে যত পণ্য পাওয়া যায় তার প্রতিটির গায়ে প্রস্তুকারী বা উৎপাদিত প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ থাকে এবং দামি বস্তুর সাথে একটি ব্যবহার নির্দেশিকা বা ক্যাটালগ দেওয়া হয়। এখন যদি আপনি একটু খুজে দেখেন আপনার ধর্মগ্রস্থে আপনার সৃষ্টির বিষয়ে কিছু বলা হয়েছে কিনা? যদি থাকে তাহলে এবার একটু ভাবেন তো? এবার আসি দ্বিতীয় বিষয়ে, আপনার জীবনের প্রতিটি বিষয়ে সুষ্পষ্ট দিকনির্দেশনা কি আপনার ধর্মীয় গ্রন্থ প্রদান করে? যদি না থাকে তাহলে এখানেও একটু ভাবার অনুরোধ করছি। বস্তুত যদিও বলি এক কিন্তু বিশ্বাস ও মতাদর্শগত পার্থক্য এবং উপাসনা করার পদ্ধতির ভিন্নতার কারণে এতগুলো ধর্মের সৃষ্টি। তবে অবশ্যই সবগুলোর মধ্যে একটিই মাত্র সঠিক হবে যেহেতু সৃষ্টিকর্তা একজন। তাই আপনাকে বলব আপনি প্রতিটি ধর্মগ্রন্থ নিয়ে একটু লেখাপড়া করুন তবে ভাই তা যেন হয় নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে। কেননা যদি আপনি দাড়িপাল্লাহ কোন কিছুকে ওজন করতে চান তাহলে শর্ত হচ্ছে দাড়ি পাল্লা টি যাচাই করে নেওয়া যেন কোন কিছু তাতে না থাকে। যদি থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি সঠিক ওজন পাবেন না আর এর জন্য আপনি দাড়িপাল্লাকে দোষারোপ করতে পারবেন না। আমি একজন মুসলিম হিসাবে বলছি, আমি আপনাকে আমার ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করা বা ধর্মান্তরিত করার জন্য কথাগুলো বলছি না। আমি আপনাকে সত্যের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যদি আপনারটি সত্য হয় তাহলে আমি অবশ্যই আপনার মতাদর্শ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ....
#কোরআন যেমন আল্লাহর কিতাব।তাহলে কি হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ গুলো ও আল্লাহর কিতাব? অথচ আলেমদের মতে হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ মানব রচিত।এটা আল্লাহর কিতাব না।
বিষয়টি জানতে চাই।
যদি দয়া করে বলতেন সনাতনধর্মে প্রতিমা পৃজার
এবিষয়ে একটু অালোচনা করেন তাহলে যারা অাজকে প্রতিমা পৃজার বিরোধিতা করেন বা অনেকেই ব্যাঙ্গ করেন তারাও এবিষয়ে অবগত হত?
আমরা প্রেরণা পাই। যেমন লক্ষ্মী দেবীর হাতে ধান থাকে এর থেকে আমরা প্রেরণা পাই যে চাষ করতে হবে। ্থা্কে্থা্কে্্থা্কে্থা্্্থ্থা্্থা্থা্কে্থা্কে্্থা্কে্থা্্্থ্থ
#Atention
হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই একথায় আমাদের বিশ্বাস নেই ।
যদি ভাই ভাই তাহলে মুসলিম ভাই শুয়োর খায় না কেন?
হিন্দু আর মুসলিম ভাই ভাই।
যাহোক অতিরিক্ত কিছু বললাম না। একজন সনাতনীকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন দেখলাম। তাই-
আপনাকে সনাসন সুন্দর সত্যের পথে সনাতনের সনির্বন্ধ নিমন্ত্রণ রইলো
পরে দেখবেন,আপনাকে ইসলাম ধর্মের দাওয়াত রইলো
মেসেনজারে পরিচয় দিয়েমেসেজ দিয়েন তারপর আপনাকে সনাতন কি তা বুঝায় বলব।
Id: niloy nill
এখন আপনি যদি একজন দুজন দেখে ধর্ম যাচাই করেন তাইলে তো কোনো ধর্মই ঠিক না।
হিন্দু ধর্মে অনেক জ্ঞান আছে সত্য, আপনার যেনে রাখা উচিৎ যে একজন মুসলিম প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে হিন্দু/খ্রিষ্ট/বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
আল-কোরান সর্বশেষ (Updated) ধর্ম গ্রন্থ।
মত্র ১৪০০ বছর পুরানো বানানো কাল্পনিক গল্প
তাই বলছি মিথ্যা ছড়িয়ে কোন লাভ হবে না । হিন্দুদের মন গলাতে পারবেন না মিথ্যা বলে ।
কাজ কাম নাই।