IQNA

আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে শত্রুতার পরিণাম

0:01 - October 29, 2022
সংবাদ: 3472726
তেহরান (ইকনা): মহান আল্লাহ মানুষকে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। মানুষ যদি তা পালন করে, নেক আমল করে, তাহলে দুনিয়ার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে। আর যদি মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যায়। তাহলে পৃথিবীর সর্বত্র বিপর্যয় নেমে আসে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। ’ (সুরা রোম, আয়াত : ৪১)
এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় আল্লাহওয়ালাদের ভূমিকা রয়েছে। কারণ তারা আল্লাহর ইবাদত করে, পাপ থেকে দূরে থাকে, মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। তারা যেমন আল্লাহর ওলি বা বন্ধু, তেমনি জগদ্বাসীরও দরদি বন্ধু। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ওলিদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে, ‘(তারাই আল্লাহর ওলি) যারা ইমান আনে এবং তাকওয়া (পরহেজগারি) অবলম্বন করে। ’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৬৩)
 
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ওলি হলেন আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুমিনরা, যাঁরা বিনয়াবনত হয়ে নামাজ আদায় করেন ও জাকাত দেন। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৫৫)
 
আমাদের উচিত, আল্লাহর এই ওলি বা বন্ধুদের সম্মান করা। তাদের প্রতি বিদ্বেষ বা শত্রুতা পোষণ না করা। এতেই আমাদের কল্যাণ। কারণ আল্লাহ যাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন, তার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করা আত্মঘাতী।
 
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে শত্রুতা রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)
 
পূর্ববর্তী যুগেও আল্লাহর বন্ধুদের সঙ্গে শত্রুতা করে বহু জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ তাদের সাময়িক ছাড় দিলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ছেড়ে দেননি। তাদের যন্ত্রণাদায়ক পরিণতি ইতিহাস হয়ে আছে।
 
তাই আমাদের উচিত, আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে শত্রুতা পোষণ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহওয়ালারাই সমাজের উত্কৃষ্ট মানুষ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের মধ্যকার উত্কৃষ্ট লোকদের সম্পর্কে অবহিত করব না? সাহাবিগণ বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, ‘যাদের দেখলে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়। তিনি আরো বলেন, আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের মধ্যকার নিকৃষ্ট লোকদের সম্পর্কে অবহিত করব না? তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, ‘যারা চোগলখোরি করে বেড়ায়, বন্ধুদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করে এবং পুণ্যবান লোকদের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১১৯)
 
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা নবীও নয়, শহীদও নয়। কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদরা তাদের ওপর ঈর্ষা করবেন। ’ মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল, তারা কারা?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহর জন্য একে অন্যকে ভালোবাসে। তাদের মধ্যে নেই কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক, নেই কোনো ধনসম্পদের সম্পর্ক। (কিয়ামতের দিন) তাদের চেহারা হবে নুরানি (উজ্জ্বল)। তারা নুরের মিম্বরের ওপর থাকবে। যখন মানুষ ভয় পায় তখন তারা ভয় পাবে না। যখন মানুষ দুঃখ পায় তখন তারা দুঃখ পাবে না। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫২৭)
 
ট্যাগ্সসমূহ: আল্লাহ ، পৃথিবীর ، আয়াত ، ইমান
captcha