IQNA

পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের আহ্বান জানালেন প্রেসিডেন্ট রুহানি

20:48 - September 25, 2019
সংবাদ: 2609293
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে নিয়ে একটি নয়া জোট গঠনের প্রস্তাব করেছেন। তিনি আজ (বুধবার) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছেন, “আমি পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীর ঘটনাবলীতে জড়িত সকল দেশকে নিয়ে একটি জোট গঠনের প্রস্তাব করছি যার নাম হতে পারে ‘কোয়ালিশন অব হোপ’ বা ‘প্রত্যাশার জোট’।”

পার্সটুডের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: হাসান রুহানি তার ভাষণে বলেন, মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ, রক্তপাত, আগ্রাসন, ধর্মীয় উগ্রতা ও জঙ্গিবাদের আগুনে জ্বলছে এবং এই আগুনের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে ফিলিস্তিনি জাতি। ফিলিস্তিনের স্বাধীকার আন্দোলন থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে এই আগুন জ্বালানো হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল মিলে ‘ডিল অব সেঞ্চুরি’ নামের যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে তা অবশ্যই ব্যর্থ হবে।

তিনি ইরানের ওপর গত প্রায় দেড় বছরের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি এমন একটি দেশ থেকে এসেছি যে দেশের জনগণ গত দেড় বছর ধরে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদের শিকার। মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা ও হুমকির মাধ্যমে ইরানি জনগণকে বিশ্ব অর্থনীতির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখার চেষ্টা করার পাশাপাশি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহার করে আন্তর্জাতিক দস্যুবৃত্তি চালু করেছে।

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সে সম্পর্কেও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। তিনি বলেন, “আমরা সেসব ব্যক্তির আলোচনার প্রস্তাবে আস্থা রাখতে পারি না যারা ঘোষণা করে তারা ইরানি জনগণের ওপর ইতিহাসের কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ” হাসান রুহানি বলেন, “মার্কিন শাসকগোষ্ঠী কীভাবে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করে গর্ব করতে পারে? ইরানি জনগণ তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অপরাধযজ্ঞে জড়িতদের যেমন কোনোদিন ভুলবে না তেমনি ক্ষমাও করবে না। ”

ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়া এবং ইউরোপের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার ব্যাপারেও কথা বলেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে তিনি আরো বলেন, “আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইরান এখন পর্যন্ত এটি মেনে চলেছে এবং ইউরোপকে এই সুযোগ দিয়েছে যে, তারা যেন ইরানের আর্থিক ক্ষতিটি পুষিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা ইউরোপীয়দের পক্ষ থেকে সুন্দর সুন্দর কথা শুনেছি কিন্তু তার বাস্তবায়ন দেখিনি। ”

নিউ ইয়র্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন প্রেসিডেন্ট রুহানিকে যে অনুরোধ করেছেন সে সম্পর্কে তিনি তার ভাষণে বলেন, “আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট তার পূর্বসুরির স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছেন। কাজেই যিনি একবার স্বাক্ষরিত চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন তার সঙ্গে আমরা আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরের আশায় আলোচনায় বসতে পারি না। আলোচনার জন্য একটিমাত্র পথ খোলা আছে; আর তা হলো- আমেরিকাকে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে এবং ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।”  iqna

captcha